লঞ্চ ডুবির ঘটনা নিয়ে দিনলিপি

 

লঞ্চ ডুবির ঘটনা নিয়ে দিনলিপি





  *লিখতে বসলাম কিন্তু ভাষা খুঁজে পেলাম না।  কি লিখতে হবে?  আজ সারাদিন যা যা দেখেছি এবং শুনেছি।  এটা কি এই ডায়েরির পাতায় সংযুক্ত করা সম্ভব?  কি ভয়ানক দৃশ্য!  কী হৃদয়বিদারক আত্মজীবনী!  সবকিছুই আমার মনকে এলোমেলো করে দিয়েছে।  আমি কিছুতেই মন বসাতে পারছি না।  কী করুণ দৃশ্যের মুখোমুখি হতে হয় একজন সাংবাদিককে।  আজ মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায়।  আড়াই শতাধিক যাত্রী নিয়ে ‘পিনাক-৬’ নামের একটি যাত্রীবাহী লঞ্চ পদ্মা নদীতে ডুবে গেছে।  খবর পেয়ে আমি সেখানে ছুটে যাই।  সেখানে গিয়ে যা দেখলাম তা বর্ণনাতীত।  নদীর তীরে হাজার হাজার মানুষ।  তীরে অপেক্ষমাণ মানুষের আকাশ-ছোঁয়া চিৎকার আকাশ কেঁপে ওঠে।  উদ্ধারকারী দল এবং সাধারণ জনগণ উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছিল।  কখনো জীবিত মানুষকে উদ্ধার করছেন, কখনো পানি থেকে নিষ্প্রাণ লাশ বের করছেন।  একটি মৃতদেহ বা একটি জীবিত মানুষ তীরে পড়ে আছে, সাধারণ মানুষ দ্বারা ঘেরা।  লাশ শনাক্ত করতে পেরে স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।  পরিবেশ ভারী হচ্ছে।  কি করুণ দৃশ্য!  চোখ দিয়ে আপনা আপনি জল চলে আসে।  পিনাক-৬ এর পাশেই লঞ্চ।  নাম ‘এমএল বিচ ব্রিজ’।  আড়াই শতাধিক যাত্রী নিয়ে লঞ্চটির এক প্রত্যক্ষদর্শীর ভাষ্য, ধীরে ধীরে ডুবে যাচ্ছে লঞ্চটি।  'এমএল পিনাক' নামে একটি লঞ্চ।  চোখের সামনে দিনকাল।  এর পাশের লঞ্চটি পদ্মার উত্তাল স্রোতে ডুবে যাবে।  শত শত যাত্রী সেই করুণ দৃশ্য দেখে আতঙ্কিত হয়ে সৃষ্টিকর্তাকে ডাকলেন।  পিনাককে আর দেখা হবে না।  কাত।  একেবারে ডুবে গেল।  একসঙ্গে বহু মানুষের সলিলসমাধি।  সেখান থেকে রিপোর্ট নিয়ে ফিরে এলাম।  কিন্তু কোণে।  কোনো স্বস্তি পাচ্ছি না।  সেই মানুষগুলোর দুর্দশার চিত্র আজও আমার চোখে ভাসে...।


লঞ্চ ডুবির ঘটনা নিয়ে দিনলিপি


   

Post a Comment

0 Comments